সুশীলগিরি ছেড়ে স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘সুশীলগিরি ছেড়ে স্বেরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন। স্বৈরাচারের দোসরদের সব ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে বাঁচান। দেশের জনগণকে বাঁচান।’

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই অনুরোধ জানান তিনি।

হাসনাত আব্দুল্লাহ তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে একটার পর একটা ষড়যন্ত্র হয়েছে। ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা শেখ হাসিনার দোসরদের অপসারণ করে প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু সুশীলগিরি দেখিয়ে সরকার সেটি না করার পরিণতি গতকাল (বুধবার) রাতে আমরা পেলাম।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে জুডিশিয়াল ক্যু’র চেষ্টা করা হলো। ছাত্ররা মাঠে নেমে সেটা রুখে দিলো। লীগ যখন আনসার হয়ে ফিরে আসছিল, এই ছাত্ররাই তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মাঠে নেমেছে। এনসিটিবিতে বই না ছাপিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র হলো, সেটাও ছাত্ররা প্রতিহত করলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনাকে সার্ভ করা দালাল মিডিয়া, সময় টিভির ক্যু রুখে দেওয়ার জন্য ছাত্ররা যখন এগিয়ে আসলো, তখনই চারদিকে শুরু হলো সুশীলদের আহাজারি। আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বাস্তবতাবিবর্জিত মিথ্যা ছড়ানো হলো। আমরা বারবার বলেছি যে, আমরা কোনও সাংবাদিকদের লিস্ট দেইনি। অথচ এরপরেও পুরোপুরি বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাফিয়ারা ক্যু করলো। যে সময় টিভি যুগের পর যুগ বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর ক্যারেকটার এসাসিনেশন করেছে, শহীদ আলিফকে হিন্দু ট্যাগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করেছে।’

‘এছাড়াও জুলাই আন্দোলনকে টেরোরিস্টদের উত্থান বানিয়ে হাসিনার ছাত্র হত্যাকে নর্মালাইজ করেছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগ করে ইমেজ নষ্ট করেছে, এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকে ডিলেজিটিমাইজ করার অ্যাটেমপ্ট পর্যন্ত নিয়েছে, আজকে তাদের জন্য সুশীলদের মায়াকান্নার শেষ নেই। প্রতিবাদ করতে যাওয়া ছাত্ররা আমরা হলাম খারাপ, আর এদের কুকীর্তিকে সমর্থন দেওয়া সুশীলরা হয়ে গেলো ভালো। এই সুশীলরাই কি গত ১৬ বছর স্বৈরাচারের নুন-ঘি খেয়ে ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করেনি? আমরা তো সেটার বিরুদ্ধেই কথা বলেছি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা আরও বলেন, ‘এই সরকার দুই হাজার মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসা সরকার। এই সরকার সুশীলতার মধ্যে দিয়ে আসেনি, এসেছে ২ হাজার শহীদ আর ৩০ হাজার আহত ভাইবোনের রক্তের ওপর দিয়ে। সেই রক্তের সঙ্গে আপস করার কোনও সুযোগ নেই। আমরা শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি— একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য, প্রশাসনলীগের হুমকি আর আগুন দেখার জন্য নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ, এদের হাত থেকে প্রশাসন মুক্ত করেন। যদি না করেন তবে গণভবন আর আদালতের মতো সচিবালয় কেমন করে আওয়ামীমুক্ত করতে হয়, সেটা ছাত্রজনতার খুব ভালো করেই জানা আছে।’

Leave a Comment